শবে বরাত কত তারিখে ২০২৫

শবে বরাত কত তারিখে ২০২৫ শবে বরাত, যা লাইলাতুল বরাত নামেও পরিচিত, ইসলাম ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতে মুসলমানরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন। শবে বরাত পালিত হয় শাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতে। বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাঁদ দেখা সাপেক্ষে শাবান মাসের শুরু ঘোষণা করে। সাধারণত, শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হয়। তাই, চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে শবে বরাতের তারিখ নির্ধারিত হয়। সাধারণত, শবে বরাতের তারিখ চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে, পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে শবে বরাত ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতে পালিত হবে। তবে, চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে এই তারিখ পরিবর্তিত হতে পারে।

শবে বরাতের তাৎপর্য

শবে বরাত আরবি শব্দ, যার অর্থ ‘মুক্তির রাত’। মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে এই রাতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের বিশেষ রহমত ও ক্ষমা প্রদান করেন। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, শাবান মাসের ১৪ তারিখের রাতে আল্লাহ পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করেন।

শবে বরাতের ইবাদত

শবে বরাতের রাতে নিম্নোক্ত ইবাদতগুলো করা যেতে পারে:

  • নফল নামাজ: এই রাতে অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করা হয়।
  • কুরআন তিলাওয়াত: কুরআন পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা হয়।
  • জিকির ও দোয়া: আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহ জপ করা এবং নিজের ও অন্যদের জন্য দোয়া করা হয়।
  • তওবা ও ইস্তিগফার: নিজের পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়।

শবে বরাতের রোজা

শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব (পছন্দনীয়) হিসেবে গণ্য হয়। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসে অধিক পরিমাণে রোজা রাখতেন।

শবে বরাতের ভুল ধারণা ও কুসংস্কার

কিছু স্থানে শবে বরাত উপলক্ষে আতশবাজি, আলোকসজ্জা বা বিশেষ খাবার বিতরণের প্রচলন রয়েছে, যা ইসলামের মূল শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। শবে বরাতের প্রকৃত তাৎপর্য হলো ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মশুদ্ধি, যা কুসংস্কার ও বিদআত থেকে মুক্ত থাকা উচিত।

শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কিত হাদিস

হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে আল্লাহ পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৬৬৪৬)

শবে বরাতের প্রস্তুতি

শবে বরাতের ইবাদতের জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে:

  • পবিত্রতা রক্ষা: ইবাদতের আগে ওজু ও গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা।
  • পরিকল্পনা: রাতের ইবাদতের জন্য একটি সময়সূচী নির্ধারণ করা।
  • পরিবারের অংশগ্রহণ: পরিবারের সদস্যদের সাথে ইবাদতে অংশগ্রহণ করা।
শবে বরাতের রাতে করণীয়

শবে বরাতের রাতে নিম্নোক্ত আমলগুলো করা যেতে পারে:

  • তাহাজ্জুদ নামাজ: রাতের শেষ অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।
  • দোয়া: নিজের, পরিবার ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করা।
  • কবর জিয়ারত: প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করে তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করা।
শবে বরাতের পরবর্তী করণীয়

শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। এছাড়া, এই মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নত।

শবে বরাতের গুরুত্ব

শবে বরাত মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি বিশেষ সুযোগ। এই রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা প্রাপ্তির আশা করা হয়।

আরো পড়ুনঃ ২০২৫ সালের ইসলামিক দিবসসমূহ

শবে বরাত সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্নাবলী (FAQs)

  • প্রশ্ন: শবে বরাতের তারিখ কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?উত্তর: শবে বরাতের তারিখ চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হয় এবং ১৪ তারিখের দিবাগত রাতে শবে বরাত পালিত হয়।

মন্তব্য করুন