পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় সূচি

ইসলামের বিধান অনুসারে একজন ব্যাক্তির ৭ বছর বয়স হলেই তার জন্য নামাজ ফরজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ একজন মুসলমানের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একজন মুসলমান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে এবং তার আধ্যাত্মিক জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারে। 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় সূচি নির্ধারণের পদ্ধতি

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় সূচি নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি প্রচলিত আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি হল হিজরি ক্যালেন্ডার অনুসারে সূর্যের অবস্থান বিবেচনা করে সময় নির্ধারণ করা।

বাংলাদেশে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় সূচি নির্ধারণের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ দায়ী। তারা হিজরি ক্যালেন্ডার অনুসারে সূর্যের অবস্থান বিবেচনা করে প্রতিদিনের নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • ওজু: নামাজের পূর্বে ওজু অবশ্যই করতে হবে।
  • পোশাক: পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতে হবে।
  • কিয়াম: নামাজের সময় মনোযোগ ধরে রাখতে হবে।
  • সময়ানুবর্তিতা: ফজরের নামাজ সময়মত আদায় করা উত্তম।

ঢাকা বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫:২১৬:৩৮
জোহর১২:১৫৩:২৪
আসর৪:১১৫:১১
মাগরি৫:৫০৬:৩৭
এশা৭:০৪সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

 রংপুর বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫:২৭৬:৪৫
জোহর১২:২০৩:২৭
আসর৪:১৩৫:২৩
মাগরিব৫:৫২৬:৪০
এশা৭:০৭সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

রাজশাহী বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫ঃ২৯৬ঃ৪৭
জোহর১২:২৩৩:৩১
আসর৪:১৯৫:১৭
মাগরিব৫:৫৭৬:৪৪
এশা৭:১১সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

বরিশাল বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫:৩৩৬:৩৭
জোহর১২:১২ ৩:২৫
আসর৪:১২ ৫:১০
মাগরিব৫:৫১ ৬:৩৮
এশা৭:০৫ সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

খুলনা বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫:২৪৬:৪১
জোহর১২:১৬৩:২৮
আসর৪:১৫৫:২০
মাগরিব৫:৫৪৬:৪১
এশা৭:০৪সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

ময়মনসিংহ বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫:২৩ ৬:৪০
জোহর১২:১৬৩:২৩
আসর৪:০৯ ৫:১০
মাগরিব৫:৪৮ ৬:৩৬
এশা৭:০৩ সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী 

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫:১৪৬:২৬
জোহর১২:০৭৪:০৪
আসর৪:০৫৫:২৭
মাগরিব৫:৪২৬:৫৬
এশা৬:৫৭সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

সিলেট বিভাগের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

ওয়াক্তসময় শুরুশেষ সময়
ফজর৫:১৬৬:৩৩
জোহর১২:০৯৩:১৬
আসর৪:০৩৫:০৪
মাগরিব৫:৪১৬:৩০
এশা৬:৫৭সুবহে সাদিকের পূর্বে পর্যন্ত

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। নামাজ মুসলমানদেরকে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করতে এবং তাঁর নির্দেশাবলী মেনে চলতে সাহায্য করে।

নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করতে পারে। নামাজ মুসলমানদেরকে ভালো কাজ করতে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের উপকারিতা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু উপকারিতা হল:

  • নামাজ আদায় করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা যায়।
  • নামাজ আদায় করলে ভালো কাজ করতে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে সাহায্য হয়।
  • নামাজ আদায় করলে মন শান্ত হয় এবং মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায়।
  • নামাজ আদায় করলে শরীর ও মন সুস্থ থাকে।
  • নামাজ আদায় করলে সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজ করে।
  • সুতরাং, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। 

ফজরের নামাজ 

ফজরের নামাজ ইসলামের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নামাজ। এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকবে।” (মুসলিম: ৬৫৭)। 

ফজরের নামাজের গুরুত্ব:

  • ঈমানের পরিচয়: ফজরের নামাজ ঈমানের পরিচয়। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী কোনো নামাজ নেই।” (তিরমিযী: ৫৮)।
  • জান্নাতের নিয়ামত: ফজরের নামাজ জান্নাতের নিয়ামত। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, সে জান্নাতের দুই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।” (তিরমিযী: ৫৮)।
  • পাপের কাফ্ফারা: ফজরের নামাজ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী দিনের পাপের কাফ্ফারা। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও আসরের নামাজ আদায় করে, তার জন্য সূর্য উদয় ও অস্ত যাওয়ার মধ্যে সংঘটিত সমস্ত পাপের ক্ষমা হয়ে যায়।” (মুসলিম: ৬৫)।
  • শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি: ফজরের নামাজ শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি দান করে।
  • রিজক বৃদ্ধি: ফজরের নামাজ রিজক বৃদ্ধি করে। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে, আল্লাহ্ তায়ালা তার জন্য রিজকের দরজা খুলে দেন।” (তিরমিযী: ৫৮)।

ফজরের নামাজ কত রাকাত ?

ফজরের নামাজ মোট চার রাকাত ।

  • দুই রাকাত সুন্নত
  • দুই রাকাত ফরজ

ফজরের নামাজের নিয়ত 

নামাজনিয়ত
দুই রাকাত সুন্নত নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
দুই রাকাত ফরজনাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

ফজরের নামাজের ফজিলত 

  • ফজরের নামাজ দুনিয়া ও দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে উত্তম।
  • ফজরের নামাজ আদায়কারী অর্ধরাত ইবাদতের সওয়াব পাবেন।
  • ফজরের নামাজ আদায় করা ব্যক্তি মুনাফিকের তালিকায় থাকবে না।
  • ফজরের নামাজ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবে। 
  • ফজরের নামাজ আদায়কারীদের জন্য পূর্ণ নুরের সুসংবাদ রয়েছে।
  • ফজরের নামাজ আদায়কারীরা ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ পাবেন।

যোহরের নামাজ

যোহরের নামাজ এবং ফজরের নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নামাজগুলো আদায়ের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারি এবং জান্নাতের অধিকারী হতে পারি। সর্বোপরি, আমাদের উচিত নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা । 

যোহরের নামাজের গুরুত্ব:

  • ফরজ নামাজ: পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মধ্যে যোহর অন্যতম। আল্লাহর রহমত ও জান্নাত লাভের জন্য এটি পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • দুপুরের সময়: দুপুরের সময়, যখন সূর্য মাথার উপরে থাকে, তখন এই নামাজ আদায় করা হয়। এই সময়টাতে মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে। তাই এই নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি মনোযোগ প্রদর্শিত হয়।
  • বিশেষ ফজিলত: হাদিসে রয়েছে, যোহরের নামাজ জামাতে পড়লে 27 গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
  • পাপের কাফফারা: যোহরের নামাজ পড়ার মাধ্যমে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যে পাপ করা হয়েছে তার কাফফারা হয়ে যায়।
  • আল্লাহর রহমত: যোহরের নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা যায়।

যোহরের নামাজ কত রাকাত ?

জোহরের নামাজ মোট ১০ রাকাত ।

  • চার রাকাত সুন্নত
  • চার রাকাত ফরজ
  • দুই রাকাত নফল

যোহরের নামাজের নিয়ত  

নামাজনিয়ত
চার রাকাত সুন্নতনাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ জোহরি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
চার রাকাত ফরজনাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ জোহরি ফারজুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
দুই রাকাত নফলনাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিজ জোহরি নফলান মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

যোহরের নামাজের ফজিলত 

  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: হাদিসে রয়েছে, যিনি নিয়মিত জোহরের পূর্ববর্তী চার রাকাত ও পরবর্তী দুই রাকাত সুন্নত আদায় করবেন, আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জাহান্নাম থেকে হারাম করে দেবেন। (তিরমিযী)
  • পাপের ক্ষমা: রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জোহরের নামাজ পড়ে, তার জন্য আল্লাহ্ তা’আলা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী দিনের পাপ মাফ করে দেন।” (মুসলিম)
  • আল্লাহ্‌র রহমত লাভ: যোহরের নামাজের সময় আল্লাহ্ তা’আলা জান্নাতের দরজা খুলে দেন এবং রহমত বর্ষণ করেন।
  • শয়তানের পরাজয়: জোহরের নামাজের মাধ্যমে শয়তান দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার ক্ষমতা হ্রাস পায়।
  • রিজক বৃদ্ধি: যারা নিয়মিত জোহরের নামাজ আদায় করে, আল্লাহ্ তা’আলা তাদের রিজক বৃদ্ধি করেন।
  • দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা: জোহরের নামাজ দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

আসরের নামাজ

আসর নামাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। নিয়মিত ও সময়মত আসরের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা সম্ভব। 

আসরের নামাজের গুরুত্ব:

  • ফেরেশতাদের পরিবর্তন: হাদিসে বর্ণিত, দিন ও রাতের ফেরেশতারা আসরের সময় পরিবর্তন করে থাকে। যারা নামাজরত অবস্থায় দেখা যায়, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে।
  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বে (ফজর) এবং সূর্যাস্তের পূর্বে (আসর) নামাজ পড়বে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।” (মুসলিম)
  • রিজিক বন্টন: দিনের শুরুতে রিজিক বন্টন করা হয়। ফজরের নামাজ আদায়কারীদের রিজিক বরকতপূর্ণ হয়।
  • পাপ থেকে বিরত রাখে: নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।
  • আল্লাহর সান্নিধ্য: নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করা সম্ভব।

আসরের নামাজ কত রাকাত ?

আসরের নামাজ মোট আট রাকাত ।

  • চার রাকাত সুন্নত
  • চার রাকাত ফরজ

আসরের নামাজের নিয়ত  

 নামাজনিয়ত
চার রাকাত সুন্নত নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাকায়াতি সালাতিল ‘আসরি সুন্নাতান রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
চার রাকাত ফরজনাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিল (নামাজের নাম) ফারজুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

আসরের নামাজের ফজিলত 

  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: হাদিসে রয়েছে, “যে ব্যক্তি আসরের নামাজের যত্ন করে, তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হবে না।” (তিরমিযী)
  • আল্লাহর রহমত: আসরের নামাজের সময় আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের দরজা খুলে দেন এবং রহমত বর্ষণ করেন। (মুসলিম)
  • গুণাহ মাফ: আসরের নামাজ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে। (মুসলিম)
  • জান্নাতের প্রবেশাধিকার: হাদিসে রয়েছে, “যে ব্যক্তি আসরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে, সে যেন দশটি উটের সওয়ারী করেছে।” (তিরমিযী)
  • জান্নাতের চাবিকাঠি: হাদিসে রয়েছে, “ফজরের নামাজ জান্নাতের চাবিকাঠি।” (তিরমিযী)
  • গুণাহ মাফ: ফজরের নামাজ পূর্ববর্তী রাতের গুনাহ মাফ করে। (মুসলিম)
  • শয়তানের পরাজয়: ফজরের নামাজের মাধ্যমে শয়তান পরাজিত হয়। (মুসলিম)

মাগরিবের নামাজ

মাগরিবের নামাজ ইসলামের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অন্যতম, যা সূর্যাস্তের পর আদায় করা হয়। এর ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম। সকল মুসলমানের উচিত সময়ানুসারে জামা’তের সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করা । 

মাগরিবের নামাজের গুরুত্ব:

  • পবিত্র কোরআনে: সূরা হুদ-এ আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, “তোমরা সূর্যাস্তের সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ পড় এবং ফজরের নামাজ পড়। নিশ্চয়ই ফজরের নামাজ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে পড়া হয়।” (সূরা হুদ: ১১৪)। এই আয়াতে মাগরিব ও ফজরের নামাজের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
  • হাদিসে: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের সাথে ‘আওয়াবিন’ নামাজ পড়বে, তার জন্য রাত জেগে ইবাদত করার সওয়াব লেখা হবে।” (তিরমিযী)।

মাগরিবের নামাজ কত রাকাত ?

মাগরিবের নামাজ মোট পাচ রাকাত।

  • তিন রাকাত ফরজ
  • দুই রাকাত সুন্নত

মাগরিরের নামাজের নিয়ত  

নামাজনিয়ত
দুই রাকাত ফরজনাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাকয়াতি সালাতিল মাগরিব ফারজুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
দুই রাকাত সুন্নতনাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল মাগরিবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

মাগরিরের নামাজের ফজিলত 

  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আসরের নামাজের যত্ন করে, তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব (নিশ্চিত) হবে না।” (তিরমিযী)
  • ৭০ গুণা পুরস্কার: আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আসরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে, তার জন্য এমন পুরস্কার আছে যেন সে ৭০ টি উটের কোরবানি করেছে।” (তিরমিযী)
  • আল্লাহর রহমত: আসরের নামাজের সময় আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের দরজা খুলে দেন এবং রহমত বর্ষণ করেন। যারা এই সময় নামাজে মনোযোগী থাকে, তারা এই রহমতের অংশীদার হয়।
  • গুনাহ মাফ: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ফজর ও আসরের নামাজের পূর্ণাঙ্গভাবে রক্ষা করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব (নিশ্চিত)।” (মুসলিম)
  • পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ: আবু মুসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আসরের নামাজ পড়ে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ করা হয়, তবে যতক্ষণ না বড় গুনাহ হয়।” (মুসলিম)
  • জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আসরের নামাজের যত্ন করে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে এবং সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।” (সুনানে আন-নাসাঈ)
  • শয়তানের প্রতিবন্ধকতা: আসরের নামাজ পড়ার মাধ্যমে মানুষ শয়তানের প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্তি পায়।
  • আল্লাহর সন্তুষ্টি: আসরের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।
  • সময়ের গুরুত্ব: আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • জামাতে আদায়ের ফজিলত: জামাতে আসরের নামাজ আদায়ের ফজিলত অনেক বেশি।

এশার নামাজ

এশার নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নামাজ। ইসলামে এর ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম।

এশার নামাজের গুরুত্ব:

  • পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে: এশার নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নামাজ।
  • জামাতে আদায়ের গুরুত্ব: হাদিসে রাসূল (সাঃ) এশার নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন।
  • শেষ নামাজ: এশার নামাজ দিনের শেষ নামাজ, তাই এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এশার নামাজের কত রাকাত ?

এশার নামাজ মোট সতেরো রাকাত।

  • চার রাকাত ফরজ
  • চার রাকাত
  • দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ 
  • দুই রাকাত নফল
  • তিন রাকাত বেতের

এশার নামাজের নিয়ত 

নামাজনিয়ত
চার রাকাত সুন্নত নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকায়াতাই সালাতিল ‘ইশায়ি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকায়াতাই সালাতিল এশায়ি সুন্নাতে রাসুলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
দুই রাকাত নফল নাওয়াইতু আন উসাল্লি রাকায়াতাইনি সুন্নাতান বা’দাল ‘ইশায়ি লিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”
তিন রাকাত বিতরনাওাইতুয়ান উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’ লা সালাসা রাক’আতাই সালাতিল বেত্রে ওয়াজিবুল্লাহি তা’লা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কা’ বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

এশার নামাজের ফজিলত 

  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি: হাদিসে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিয়মিত এশার নামাজ জামাতে আদায় করবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।” (তিরমিযী)
  • গুনাহ মাফ: হাদিসে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি এশার নামাজের পূর্বে ওয়ুযু করে নামাজ আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (মুসলিম)
  • আল্লাহর সন্তুষ্টি: এশার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব।
  • শান্তির ঘুম: এশার নামাজের পর ঘুমালে শান্তিপূর্ণ ঘুম হয়।

মন্তব্য করুন