৩০ টি রোজার ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে জানুন আজকের পোস্টে। ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো রোজা। রোজার অনেক ফজিলত ও তাৎপর্যয় রয়েছে। আজকের পোস্টে ৩০ টি রোজার ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ইসলামে ৩০ টি রোজার ফজিলত
সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মত (সাঃ) বলেছেন ‘যে বেক্তি রমজানের ৩০টি রোজা পেলে। কিন্তু সে তারা গুনাত মাফ করাতে পারল না তার ধ্বংস হোক।’ (বায়হাকী: ১৫৭২) সুতারাং বুঝায় যায় মুসলমানদের জন্য রমজান খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাসে। এ মাস দোয়া কবুলের মাস এবং গুনাহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার মাস।
রমজানের সবচেয়ে বড় ইবাদত হলো। রোজা পালন করা। কেননা রোজা একটি ফরজ ইবাদত। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে একটি রোজাও ভঙ্গ করে তার জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তির ব্যবস্থা। তাই আমাদের সকলের উচিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পাশাপাশি রোজা পালন করা।
এছাড়াও রমজানের মাসের আরোও অনেক ফজিলত রয়েছে যেগুলো হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হাদিসে এসে রাসূল (সাঃ) ও তার সাহাবীগণ রমজানের পূর্বেই রমজানের জন্য বেকুলতা প্রকাশ করতেন। তারা পড়তে ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ও শাবান ওবাল্লিগনা রমাদান’ অর্থাৎ হে আল্লাহ আপনি রজব এবং শাবান মাসে আমাদের বরকত দিন এবং রমজান পর্যন্ত হায়াত দান করুন।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আমাদের পূর্ব পুরুষ ও আমাদের উপর রমজান ফরজ হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। যাতে করে আমরা এ রমজান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে পারি।
তাছাড়াও বিশ্ব নবী হয়রত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন জান্নাতের মধ্যে ৮টি দরজা রয়েছে। যার মধ্যে একটি দরজার নাম হলো রাইয়্যান। যেটি দিয়ে রোজাদার ব্যক্তি ছাড়া আর অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।
আল্লাহর পক্ষ থেকে ৩০ টি রোজার ফজিলত
রাসূল (সাঃ) বলেন ‘রোজাদার ব্যক্তির পুরস্কার আল্লাহ তালা নিজ হাতে দান করবেন’। এছাড়াও রমজানে রোজা রাখা অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহর কাছে দোয়া করেন আল্লাহ তালা সাথে সাথে তা কবুল করেন (ইনসাআল্লাহ)। রাসূল (সাঃ) আরোও বলেন রমজানে প্রতিটি আমলের বিনিময় ৭০ গুন বেশি সাওয়াব পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কেউ যদি রোজা রাখা অবস্থায় একটি ফরজ আমাল করে তাহলে ৭০ টি ফরজ আমলের সাওয়াব পাবে।
রাসূল (সাঃ) আরোও বলেন। কেউ যদি সাওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে এবং ফরজ ইবাদত গুলো পালন করে আল্লাহ তাদের গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দিবেন (আমিন)। আরোও বিভিন্ন হাদিস দ্বারা রমজানের ৩০ টি রোজার ফজিলত সম্পর্কে জানা যায়। যেমন: রাসূল (সাঃ) বেলেছেন কেউ যদি ঈমানের সহিত রমজানের ৩০ টা রোজা পালন করে আল্লাহতালা তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন সুবহান আল্লাহ।
হাদিসে দ্বারা ৩০ টি রোজার ফজিলত
হাদিসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ‘রোজা এবং কুরআন কেয়ামতের দিন এগুলো পালনকারীর পক্ষে সুপারিশ করবেন এবং আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করে নিবেন’। (সুবহান আল্লাহ্)
রমজানের আরেকটি তাৎপর্য হলো রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের সবগুলো দরজা খুলে দেন এবং জাহান্নামের দরজা গুলোকে বন্ধ করে দেন। এছাড়াও রমজান মাসে বিতাড়িত শয়তানকে শিকল বন্দী করেন।
এছাড়াও রাসূল (সাঃ) বলেছেন তোমাদের মাঝে হাজার রাতের উপেক্ষা উত্তম একটি রাত হলো লাইলাতুল কদর রাতে। যে রাতে পবিত্র কুরআন অবর্তীণ হয়েছে। এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম। যেটি মূলত রমজান মাসে হয়ে থাকে। সুতারাং বুঝা যায় রমজান মাস মুসলিমদের নিকট একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস মহিমান্বিত মাস।
রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল সমূহ
রমজান মাস রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস। তাই এই মাসে অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। যেগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি। নিম্নে রসজানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল তুলে ধরা হলো।
- রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত গুলোর মধ্যে অন্যতম ইবাদত হলো। প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তিদের উত্তমভাবে রমজানের রোজা পালন করা।
- তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি অর্জন করা। রমজানে আমরা যেভাবে আল্লাহকে ভয় করে নির্জনেও কোন কিছু পানাহার থেকে বিরত থাকি। ঠিক একইভাবে রমজানের পরেও অন্তরে আল্লাহ ভীতি পোষণ করা এবং সকল গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা।
- সুন্নত অনুসারে সাহারি ও ইফতার গ্রহণ করা। অর্থাৎ পেটের এক তৃতীয়াংশ খাবার, এক তৃতীয়াংশ পানি এবং একভাগ খালি রাখা।
- এতিমদের খাবার খাওয়ানো। রোজদারিদের ইফতার করানো ও রমজানের আরেকটি বিশেষ সুন্নত ইবাদত।
- পাঁচ ওয়াক্ত রামাজ পড়া এবং কায়েক করা।
- খারাপ, মন্ধ ও অশীল কাজ থেকে বিরত থাকা।
- মিথ্যা কথা বলা, মুনাফিকী করা বা অন্যের হক অনিষ্ট করা থেকে বিরত থাকা।
- বেশি বেশি নফল ইবাদত করা যেমন: কুরআন পড়া, তারাবী ও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ইত্যাদি।
- দান-সদকা করা বা যাকাত দেওয়া
- রসজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা বা লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করা।
আশা করি, আর্টিকেলটি পড়ে আপনি ৩০ টি রোজার ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে জানেত পেরেছেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।